ভূমিকা
রক্ষণাবেক্ষণ এমন একটি কর্তব্য যার অবহেলা নিজ পায়ে কুড়াল মারার শামিল। যন্ত্রপাতি, মালামাল ও সরঞ্জামাদির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের উপর যে কোনো মেশিনের কাজ বা লক্ষ বহুলাংশে নির্ভরশীল। যে কোনো যন্ত্রপাতি, মালামাল ও সাজ সরঞ্জামাদি থেকে শতভাগ সেবা পেতে হলে এদেরকে সর্বদাই কার্যোপযোগী রাখতে হয়। সে জন্য দরকার এদের যথোপযুক্ত পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ।
রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি
মেশিনের পরিচর্যা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
ক)হ্যান্ড টুলস
* হ্যামার
* ফাইল
* চিজেল
* রেজ
* ডিভাইডার
* অ্যাডজাস্টটেবল রেঞ্জ
* পাইপ রেঞ্জ
* স্প্যানার
* বক্স রেঞ্জ
* টর্ক রেঞ্জ
সতর্কতা
(ক) মেশিন,যন্ত্রপাতি ইত্যাদির ক্ষয় হয়ে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষ্যে রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত।
(খ) যে কোনো যন্ত্রপাতি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত।
(গ) রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহৃত মেশিনারি ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত।
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
উৎপাদন কাজে কিছু যন্ত্রপাতি সরাসরি অংশগ্রহণ করে না অর্থাৎ পরোক্ষভাবে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে তাদেরকে সরঞ্জাম বলে এবং কিছু যন্ত্রপাতি আছে যেগুলো উৎপাদন কাজে সরাসরি নিয়োজিত হয় অর্থাৎ কাজে সরাসরি ব্যবহার করা হয় তাদেরকে টুলস বলে। এ সরঞ্জাম ও টুলস এক একজন প্রযুক্তিবিদকে সহজেই শনাক্ত করা বা চেনা উচিত। টুলসের নাম না জানলে মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। নিচে কিছু টুলসের তালিকা দেওয়া হলো ।
টুলস ও সরঞ্জামের তালিকা
ভূমিকা
রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহের মধ্যে কোন যন্ত্রটি কোন কাজে ব্যবহৃত হবে তা পূর্বেই জেনে নিতে হবে বা নিশ্চিত হতে হবে। নতুবা ব্যবহারের সময় উক্ত যন্ত্রটি ব্যবহার না করে অন্য একটি যন্ত্র ব্যবহার করলে উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত মেশিনটি পুরোপরি অকেজো হয়ে যেতে পারে। কাজেই মেশিন সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ ও অর্থের অপচয় কমানোর লক্ষ্যে প্রতিটি মেশিন অপারেটর অথবা ফিটারের উপযুক্ত টুলসের বা সরঞ্জামের ব্যবহারে সম্বন্ধে অবগত থাকতে হবে।
যন্ত্রের তালিকা ও যন্ত্রের ব্যবহার
০ ফাইল, চিজেল, ট্যাপডাই, স্লিপ ইত্যাদি-হাত দ্বারা ব্যবহৃত হয়।
০ ড্রিল মেশিন, লেদ মেশিন, গ্রাইন্ডিং মেশিন মেশিন টুলস ।
০ স্টিল রুল, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, মাইক্রোমিটার- মাপার কাজে ব্যবহৃত হয়।
০ ফাইল, চিজেল, হ্যাকস - কাটিং-এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
০ টেস্টার, রিং প্রুফ, ওয়ার গেজ, সিলিন্ডার রোর গেজ টেস্টিং টুলস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সতর্কতা
০ যন্ত্রটি চেনা থাকলে দুর্ঘটনা হ্রাস পায়।
০ অর্থের অপচয় হ্রাস করার জন্য যন্ত্রটির ব্যবহার জানতে হবে।
০ যন্ত্রের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য/উপসংহার
ভূমিকা
রক্ষণাবেক্ষণ কাজের শেষে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসমূহ এখানে সেখানে ফেলে না রেখে প্রতিটি টুলস বা যন্ত্রকে যত্ন সহকারে পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট স্থানে সাজিয়ে রাখতে হবে যেন পরবর্তী কাজের সময় টুলস বা সরঞ্জামকে খুঁজতে না হয় । সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায়। উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে যন্ত্রপাতি মেশিনসমূহ ভালো রাখার তাগিদে ও এর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজের পূর্বে ও পরে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পরিষ্কার রাখার প্রক্রিয়াকেই পরিষ্কারকরণ বলা হয়।
পরিষ্কারকরণ কাজে ব্যবহৃত উপকরণ
o তেল
o গ্রিজ
o কেরোসিন তেল
০ পানি
o সাবান
o নেকড়া
o পরিষ্কার কাপড় ইত্যাদি
সতর্কতা
• ব্যবহারের পর সরঞ্জামসমূহ এখানে সেখানে ফেলে রাখা উচিত নয় ।
• টুলস বা যন্ত্রপাতি পরিষ্কার না করলে যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
• নির্দিষ্ট স্থানে টুলসসমূহ সাজিয়ে রাখা উচিত।
মন্তব্য/উপসংহার
ভূমিকা
দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণযোগ্য অথচ দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দুর্ঘটনা ঘটবে। তাই নিরাপত্তা বিধিগুলোর যথাযথ অনুশীলন, পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নই কেবল দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে পারে। সুতরাং যে কোনো মেশিন বা কারখানার নিরাপদ পদ্ধতিগুলোর যথাযথ প্রয়োগ ও অনুশীলনের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। যে ঘটনাপ্রবাহ দ্বারা কর্মে সাধারণ প্রক্রিয়া ও ধারাবাহিকতার ব্যাহত হয় তাকে দুর্ঘটনা বলে ।
নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতির জন্য নির্দিষ্ট সতর্কতা
০ কাজের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত মানের বা মাপের যন্ত্রপাতি নির্বাচন করতে হবে।
০ যেখানে বা মেশিনের যে অংশে ব্যবহার করবে তার সম্বন্ধে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। নতুবা মেশিন ভেঙে যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
০ ঠিক কোন স্থানে টুলস বা সরঞ্জাম ব্যবহার করবে তা নিশ্চিত হতে হবে।
০ আঘাত করা বা যন্ত্র দ্বারা চাপ দেওয়ার পূর্বে নির্দিষ্ট মাপে বা নির্দিষ্ট ওজনে আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হবে। স্টিলের তৈরি মেশিন বা যন্ত্রাংশে আঘাত করতে হলে কাঠের বা প্লাস্টিকের তৈরি হ্যামার ব্যবহার করতে হবে।
মন্তব্য/উপসংহার
সংজ্ঞা
(ক) কৃত্রিম আঁশ :
যে সমস্ত ফাইবার প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়নি কিন্তু বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোকে কৃত্রিম আঁশ বলে।
(খ) আংশিক কৃত্রিম :
প্রাকৃতিক বিভিন্ন সেলুলোজিক পদার্থকে অবস্থা ও গুণাগুণের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন যে ফাইবার তৈরি করা হয় তাকে আংশিক কৃত্রিম ফাইবার বলে । উদাহরণ- ভিসকোস রেয়ন, কিউপ্রামোনিয়াম রেয়ন, অ্যাসিটেড রেয়ন ইত্যাদি।
(গ) পূর্ণ কৃত্রিম
সম্পূর্ণ কৃত্রিম অর্থাৎ রাসায়নিক পদার্থকে পলিমারাইজেশন করে ১০০ ভাগ কৃত্রিম ফাইবার তৈরি করা হয়। উদাহরণ- নাইলন, পলিয়েস্টার, অ্যাকরাইলিক, স্পানডেক্স ইত্যাদি।
কৃত্রিম আঁশ তৈরি কাঁচামালের পরিচিতি
কৃত্রিম আঁশের মূল উৎস পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লা। সাধারণত সিনথেটিক বিভিন্ন মনোমার থেকে পলিমারাইজেশনের মাধ্যমে সিনথেটিক ফাইবার উৎপন্ন হয়। মিথেল থেকে ভিনাইল ক্লোরাইড, ভিনাইল অ্যাসিটেড ইত্যাদি মনোমার পাওয়া যায় । আবার প্রোপাইলিন থেকে পলিপ্রোপাইলিন, অ্যাকরাইলো নাইট্রাইল, বেনজিন থেকে অ্যাডিপিক অ্যাসিড, মেক্সামিথিলিন ডায়ামিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। যার দ্বারা ফাইবার প্রস্তুত করা করা হয়।
সতর্কতা
বিভিন্ন স্পিনিং পদ্ধতিতে কৃত্রিম আঁশ তৈরি করা সম্ভব। নির্দিষ্ট আঁশ নির্দিষ্ট স্পিনিং পদ্ধতিতে সংগ্রহ করতে হবে।
উপসংহার /মন্তব্য
* স্পর্শ বা অনুভব পরীক্ষা (Feeling test )
স্পর্শ পরীক্ষা সাধারণত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। যে সমস্ত প্রযুক্তিবিদ ফাইবার নিয়ে কাজ করে, শুধু তাঁরাই আঁশ দেখে এবং অনুভব করে আঁশের নাম এবং কোয়ালিটি সমন্ধে ধারণা করতে পারেন।
আগুনে পুড়ে পরীক্ষা (Burningtes )
টেক্সটাইল বিভিন্ন ফাইবারের গঠনগত উপাদানের কারণে আগুনে পোড়ার পর আঁশের আচরণ- ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। ফলে উক্ত আচরণ শনাক্ত করে আঁশকে চিহ্নিত করা হয়। সাধারণত আঁশের গুচ্ছ থেকে করেকটি আঁশ অথবা কাপড়ে থেকে মমুনা টুকরো সংগ্রহ করে তার থেকে একটা বা দুইটা করে সুতা আগুনের শিখার উপর ধরা হয় এবং আনুমানিক ১০ সেকেন্ড জ্বলতে দেওয়া হয়।
নাইলন
• ধীরে ধীরে পুড়ে ও গলে যায় ।
• আগুন হতে সরালে শিখা আস্তে আস্তে নিভে যায়।
• পিরিডন-এর হালকা পক্ষ পাওয়া যায়।
• চকচকে বা বাদামি শক্ত গোলাকার পুঁতির দানার মতো অবশিষ্ট থাকে।
পলিয়েস্টার
• পুড়ে ধীরে ধীরে গলে যায়।
• শিখা আস্তে আস্তে নিতে যায়, সহজে দাহ্য থাকে না।
• মৃদু মিষ্টি অ্যারোমেটিকের পদ্ধ পাওয়া যায়।
• চকচকে বা বাদামি শক্ত গোলাকার ভঙ্গুর পুঁজির দানার মতো ছাই পাওয়া যায় ।
জ্যাকরাইলিক
• দ্রুত জ্বলে ও মিটমিট করে।
• আগুন হতে সরালে অবিরাম পলে ও পুড়তে থাকে।
• মৃদু মাংস পোড়া গন্ধ ।
• ভঙ্গুর শক্ত অসমান পুঁজির দানার মতো ছাই পাওয়া যায় ।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা
বিভিন্ন আঁশের প্রকৃতি নির্ধারণে অণুবীক্ষণিক পরীক্ষাই সর্বাপেক্ষা উত্তম, নির্ভরযোগ্য ও নির্ভুল। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রাখলে বিভিন্ন আকৃতির আঁশ বিভিন্ন দেখায়।
নাইলন
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা বিভিন্ন আঁশের প্রকৃতি নির্ধারণে অণুবীক্ষণিক পরীক্ষাই সর্বাপেক্ষা উত্তম, নির্ভরযোগ্য ও নির্ভুল। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রাখলে বিভিন্ন আকৃতির আঁশ বিভিন্ন দেখায়।
পলিয়েস্টার
মসৃণ এবং সোজা, ক্রস সেকশন গোলাকার সাধারণত চকচকে তবে কখনও কখনও কম চকচকে করা হয়।
রাসায়নিক পরীক্ষা (Chemical test )
এই পদ্ধতিতে ফাইবার শনাক্ত করা খুবই কষ্টসাধ্য, যখন একই কাপড়ে বা সুতয় বিভিন্ন ধরনের ফাইবার ব্লেন্ডেড অবস্থায় মিশ্রিত থাকে।
ভূমিকা
সুতা বা কাপড় তৈরির গুণাবলি বিদ্যমান এ রকম ফাইবারকেই টেক্সটাইল ফাইবার বলা হয়। সমস্ত টেক্সটাইল ফাইবার সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি প্রাকৃতিক ফাইবার এবং অন্যটি মানুষের তৈরি ফাইবার। মানুষের তৈরি ফাইবারকেই কৃত্রিম ফাইবার নামে অভিহিত করা হয়েছে। যা তার উৎসের উপর নির্ভর করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি পূর্ণ কৃত্রিম অন্যটি আংশিক কৃত্রিম।
বিভিন্ন প্রকার ব্যালেন্স
টেক্সটাইল ফাইবার, সুতা ও কাপড় পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ব্যালেন্স ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে অনেক আধুনিক ব্যালেন্সও পাওয়া যায়। যা দ্বারা সরাসরি টেক্সটাইল পণ্যের ওজন মাপা হয় ।
বিভিন্ন প্রকারের ব্যালেন্সের তালিকা
• নোয়েলস ব্যালেন্স
• কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স
• বিজলিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স
• এনালাইটিক্যাল ব্যালেন্স
• ইলেকট্রনিক ব্যালেন্স ইত্যাদি
সতর্কতা
ব্যালেন্স ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে খুব সূক্ষ্ম ওজন নেওয়ার সময় বাতাস ব্যালেন্সে স্পর্শ করতে না পারে ।
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
বিভিন্ন মিলকারখানায় ফাইবার, সুতা ও কাপড় পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যালেন্স রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্যালেন্স ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট ব্যালেন্স
(ক) অ্যানালাইটিক্যাল ব্যালেন্স
এই ব্যালেন্সের সাহায্যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা সহজ এবং শিল্প কারখানায় রুটিন টেস্টের জন্য খুবই উপযোগী। র্যাপরিল দ্বারা সুতার লি প্রস্তুত করে অ্যানালাইটিক্যাল ব্যালেন্স ওজন করে সহজেই সুতার কাউন্ট বের করা সম্ভব। তবে এ ব্যালেন্স অন্যান্য অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়।
(খ) কোয়ার্ডেন্ট ব্যালেন্স
এই ব্যালেন্সের সাহায্যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করা অত্যন্ত সহজ। এতে কোনো ক্যালকুলেটর ছাড়াই স্কেল থেকে সুতার কাউন্ট জানা যায়। যে সুতার কাউন্ট নির্ণয় করতে হবে তার নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য র্যাপিলের সাহায্যে বের করে কেটে হুকে স্থাপন করলেই নির্দেশকটি স্কেলের মধ্যে যে বিন্দু নির্দেশ করবে তা সরাসরি উক্ত কাউন্ট নির্দেশ করে ।
(গ) নোয়েলস ব্যালেন্স
এটি একটি বিশেষ ধরনের ব্যালেন্স। যা দ্বারা সরাসরি সুতার কাউন্ট পাওয়া যায়। এ পদ্ধতি সুতার কাউন্ট বের করার জন্য কোনো গাণিতিক হিসাবের প্রয়োজন নেই। স্কেল থেকে সরাসরি সুতার কাউন্ট জানা যাবে।
(ঘ) বিজনিস ইয়ার্ন ব্যালেন্স
এ ব্যালেন্সে কাপড় হতে সুতার ছোট ছোট টুকরো সংগ্রহ করে আদর্শ ওজনের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক সুতার টুকরো রেখে ডেটাম লাইন বরাবর নির্দেশকটি এলেই টুকরা সুতার সংখ্যাই সুতার কাউন্ট। এ পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ ও কম সময়ে বের করা সম্ভব ।
(ঙ) ইলেকট্রনিক ব্যালেন্স
এ ব্যালেন্সে বিভিন্ন ওজন নেওয়ার নিমিত্ত ফাইবার, সুতা, কাপড় ইত্যাদির জন্য প্রথম থেকেই আলাদা প্রোগ্রাম করা থাকে। যে বস্তুটি ওজন করতে হবে তা সরাসরি ওজনের জন্য সেই নির্দেশিত মান ব্যালেন্সের বোতাম বা সুইচের মাধ্যমে মনিটরে ওজন করলেই সরাসরি সুতা বা কাপড়ের ওজন পাওয়া যাবে। বর্তমানে কাপড়ের জিএসএম (GSM) বের করার ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ব্যালেন্স প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সতর্কতা
প্রতিটি ব্যালেন্স ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে। ভুলভাবে নাড়াচাড়া ব্যালেন্সকে নষ্ট করে দিতে পারে।
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
র্যাপরিলের পরিধি সাধারণত ১.৫ গজ। কাজেই একটি লি তৈরি করার জন্য র্যাপরিলকে ৮০ বার ঘূর্ণন দেওয়া প্রয়োজন। র্যাপরিলে ৮টি ববিন স্ট্যান্ড থাকে। ববিন স্ট্যান্ড এর পাশাপাশি গাইডও ৮টি থাকে যার মাধ্যমে আটটি লি তৈরি করা সম্ভব।
পদ্ধতি
সাধারণত দুই প্রকার র্যাপরিল পাওয়া যায়, একটি ম্যানুয়াল ও অপরটি বৈদ্যুতিক। ম্যানুয়াল র্যাপরিলে হ্যান্ডেল থাকে যার মাধ্যমে ৮০ বার ঘূর্ণন দ্বারা ১২০ গজের সুতার লি তৈরি করা যায়। এটি ছাড়াও বৈদ্যুতিক র্যাপরিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৮০ বার ঘূর্ণনের পর (৮০ x ১.৫) ১২০ গজের একটি লি প্রস্তুত করার পর থেমে যায়। র্যাপরিলে একবারে ৮টি লি তৈরি করা সম্ভব।
সংজ্ঞা
(ক) কটন কাউন্ট
এক পাউন্ড ওজনের সুতার মধ্যে ৮৪০ গজের যতটা হ্যাংক থাকে উক্ত সুতার কাউন্ট তত।
(খ) মেট্রিক কাউন্ট
১০০০ মিটারের যতগুলো স্টেইনের ওজন ১ কেজি সুতার কাউন্ট তত হবে।
(গ) টেক্স কাউন্ট
১০০০ মিটার বা ১ কিলোমিটার সুতার ওজন যত গ্রাম হবে সুতার কাউন্ট তত হবে।
(ঘ) ডেনিয়ার
৯০০০ মিটার সুতার ওজন যত গ্রাম হবে উক্ত সুতার ডেনিয়ার তত।
(ঙ) উরস্টেড কাউন্ট
৫৬০ গজের যতগুলো হ্যাংকের ওজন এক পাউন্ড হবে উক্ত সুতার উরস্টেড কাউন্ট তত।
(চ) স্পাইন্ডেল
১৪৪০০ গজ সুতার ওজন যত পাউন্ড হবে সুতার কাউন্ট তত পাউন্ডস/স্পাইন্ডেল
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
একটি সুতার প্রস্থচ্ছেদ করলে তার মধ্যে অনেকগুলো আঁশ দৃষ্টিগোচর হবে। আঁশসমূহ আলাদা আলাদা থাকলে একসঙ্গে একে আমরা সুতা বলব না। কিন্তু এই আলাদা আঁশসমূহ একত্রে মোচড় দেওয়া অবস্থায় থাকলে তখন তাকে আমরা সুতা বলব। কাজেই আঁশ যখন আলাদা আলাদা পাশাপাশি থাকে তাকে সুতায় রূপান্তরিত করার জন্য যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্যাচ বা মোচড় দেওয়া হয় তাকে আমরা পাক বা টুইস্ট বলে থাকি।
সংজ্ঞা
টুইস্ট: সুতার মধ্যে অবস্থিত আঁশসমূহকে তার অক্ষের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ডান থেকে বামে অথবা বাম থেকে ডানে যে প্যাঁচ বা মোচড় দেওয়া হয় তাকে পাক বা টুইস্ট বলে।
টুইস্ট এর প্রকারভেদ
টুইস্ট -এর দিকের উপর নির্ভর করে টুইস্ট -এর প্রকারভেদ করা হয়। অর্থাৎ আঁশসমূহ সুতার অক্ষের সাথে কোন দিকে আবর্তিত হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে টুইস্টের প্রকারভেদ করা হয় । তাই টুইস্ট উপর নির্ভর করে একে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। -এর দিকের
১। এস টুইস্ট (S-twist)
২। জেড টুইস্ট (Z-twist )
এস টুইস্ট (S-twist)
এক্ষেত্রে আঁশসমূহ সুতার অক্ষের সাথে বামদিকে ঘুরে ঘুরে ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে তার বিপরীত দিকে ঘুরে যে টুইস্ট গঠন করে তাকে এস টুইস্ট (S-twist) বলে।
জেড টুইস্ট (Z-twist)
এক্ষেত্রে আঁশসমূহ সুতার অক্ষের সাথে ডান দিকে ঘুরে ঘুরে ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে তার দিকে ঘুরে যে টুইস্ট গঠন করে তাকে এস টুইস্ট (S-twist) বলে।
সংজ্ঞা
সুতার মধ্যে অবস্থিত আঁশসমূহকে টুইস্ট প্রদান করে সুতায় রূপান্তরিত করা হয়। সুতায় প্রতি ইঞ্চিতে যতগুলো টুইস্ট থাকে তাকে টিপিআই বা টুইস্ট/ইঞ্চি বলে ।
সুতায় টুইস্ট প্রদানে গুরুত্ব
সুতায় টুইস্ট প্রদানের গুরুত্ব নিচে আলোচনা করা হলো।
১। টুইস্ট প্রদানে সুতার শক্তি বৃদ্ধি পায়।
২। পাশাপাশি অবস্থিত সমান্তরাল আঁশসমূহে টুইস্ট প্রদানের কারণে আঁশের মধ্যে আন্তঃসংযোগ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।৩। স্পিনিং থেকে উৎপাদিত সুতা দৃঢ় হয় ফলে স্পিন্ডেলে জড়াতে সহজ হয়।
৪। টুইস্ট প্রদানের ফলে সুতা গোলাকৃতি আকার ধারণ করে এবং সুতার চাকচিক্যতা বৃদ্ধি পায়।
৫। টুইস্ট প্রদান নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকলে সুতা যথেষ্ট মজবুত হয়।
৬। টুইস্ট প্রদানের কারণেই পরবর্তী প্রক্রিয়া অর্থাৎ কাপড় তৈরিতে সহজ হয়।
ভূমিকা
সুতার সমান্তরাল ফাইবারগুলোকে একসাথে ধরে রাখার জন্য সুতার অক্ষের সাথে ফাইবারগুলো পাক বা টুইস্ট দেওয়া হয়। টুইস্ট বা পাক পরিমাপের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তবে কোনটি কখন ব্যবহার করা হয় তা নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
০ পরীক্ষণীয় বস্তু
০ পরীক্ষণীয় বস্তুর আকৃতি
• পরীক্ষর্ণীয় বস্তুর পরিমাণ
• ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা
সুতার পাক পরিমাপের যন্ত্রের তালিকা
১. অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার
২. কন্টিনিউয়াস টুইস্ট টেস্টার
৩. টুইস্ট কন্সট্রাকশন
৪. টেল আপ টুইস্ট টেস্টার
৫. টুইস্ট মেজারমেন্ট বাই মাইক্রোস্কোপ
পাক পরিমাপের যন্ত্রের পরিচিতি
অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার
অর্ডিনাবি টুইস্ট টেস্টারের মাধ্যমে সিঙ্গেল অথবা প্লাই সুতার টুইস্ট পরিমাপ করা হয়। এ যন্ত্রে দুটি বাঁট থাকে । একটি স্থির অন্যটি চলমান। স্থির বাঁটটি বেসের সাথে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে। অন্য বাঁটটি চলনশীল একটি রেইলের উপর বসানো থাকে যাতে এ বাঁটটি পরীক্ষণীয় বস্তুর দৈর্ঘ্য অনুযায়ী একটি ক্যারেজ -এর মাধ্যমে সরানো যায়। একটি স্থির বাট এবং চলনশীল বাঁটের মধ্যে আটকানো সুতার দৈর্ঘ্য নির্দেশ করে। একটি হুইলের সাথে যুক্ত হাতল উভয় দিকে ঘুরানো যায়। ফলে স্থির বাঁটের ক্লাম্প ঘুরে এবং একই সাথে ক্লাম্পটি কতবার ঘুরবে তা ডায়ালের পয়েন্টার দ্বারা নির্দেশ করে।
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
সুতার পাক পরিমাপের পূর্বে সুতার নমুনায়ন সঠিকভাবে করতে হবে। পাকের পরিমাণ সুতার সব জায়গায় সমান থাকে না। সাধারণত সুতার চিকন জায়গায় পাক বেশি থাকে এবং মোটা জায়গায় পাক কম থাকে। তাই নিজের ইচ্ছা মতো সুতা নিয়ে পাক পরীক্ষা করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। তাই একটি লম্বা সুতা থেকে পাক পরিমাপ করার জন্য যে নমুনা নেওয়া হবে তা কমপক্ষে ১ গজ অন্তর অন্তর নিতে হবে। এটা ছাড়া একটি ইয়ার্ন প্যাকেজ থেকেও সুতা সংগ্রহ না করে অন্তত ১০টি প্যাকেজ থেকে ২০টি পরীক্ষা করতে হবে।
অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টারের সাহায্যে পাক পরিমাপ
অর্ডিনারি টুইস্ট টেস্টার মাধ্যমে সিঙ্গেল অথবা প্লাই সুতার টুইস্ট পরিমাপ করা হয়। এ যন্ত্রে দুটি বাঁট থাকে। একটি স্থির অন্যটি চলমান। স্থির বাঁটটি বেসের সাথে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে। অন্য বাঁটটি চলনশীল একটি রেইলের উপর বসানো থাকে যাতে এ বাঁটটি পরীক্ষণীয় বস্তুর দৈর্ঘ্য অনুযায়ী একটি ক্যারেজ এর মাধ্যমে সরানো যায়। একটি স্থির বাঁট এবং চলনশীল চিমটার/ক্লাম্পের মধ্যে আটকানো সুতার দৈর্ঘ্য নির্দেশ করে। একটি হুইলের সাথে যুক্ত হাতল উভয় দিকে ঘুরানো যায়। ফলে স্থির বাঁটের ক্লাম্প ঘুরে এবং একই সাথে ক্লাম্পটি কতবার ঘুরবে তা ডায়ালের পয়েন্টার দ্বারা নির্দেশ করে।
ফলাফল
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচার বিভাগের সর্বশেষ মেশিন রিং ফ্রেম থেকে প্রাপ্ত রিং ববিনের সুতাসমূহ দ্বারা সরাসরি কাপড় প্রস্তুত করা সম্ভব হয় না। অর্থাৎ তাঁতে ব্যবহার করা যায় না। তাঁতে ব্যবহারের পূর্বে কতগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ ধাপগুলোর প্রথমটিই হচ্ছে ওয়াইন্ডিং।
ওয়াইন্ডিং -এর প্রকারভেদ
ওয়াইন্ডিং প্রক্রিয়া তিন প্রকার
ক) সমান্তরাল ওয়াইন্ডিং
খ) প্রায় সমান্তরাল ওয়াইন্ডিং
গ) আড়াআড়ি ওয়াইন্ডিং
ক)সমান্তরাল ওয়াইন্ডিং
ইয়ার্ন প্যাকেজে ধরনের ওয়াইন্ডিং -এ সুতাসমূহ সমান্তরালভাবে জড়ানো থাকে।
খ) প্রায় সমান্তরাল ওয়াইন্ডিং
ইয়ার্ন প্যাকেজে ধরনের ওয়াইন্ডিং -এ সুতাসমূহ প্রায় সমান্তরালভাবে জড়ানো থাকে ।
গ) আড়াআড়ি ওয়াইন্ডিং
এ ধরনের প্যাকেজে সুতাগুলো কোনাকুনি অবস্থানে জড়ানো থাকে । বিভিন্ন প্রকার ওয়াইন্ডিং প্যাকেজের নাম
o কোন
০ চিজ
o স্পুন
০ পান
০ কপ ইত্যাদি ।
উপসংহার /মন্তব্য
সংজ্ঞা
(ক)কোন ওয়াইন্ডিং
যে পদ্ধতিতে সুতার ছোট প্যাকেজ (রিং ববিন) থেকে পরবর্তী বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সুতার বড় প্যাকেজ অর্থাৎ কোন আকারে সুতায় জড়ানো হয় তাকে ওয়াইন্ডিং বলে। কোন ওয়াইন্ডিং পদ্ধতিতে যে ইয়ার্ন প্যাকেজ প্রস্তুত হয় তাকে কোন বলে। কোন সাধারণত টানা সুতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(খ) পার্ন ওয়াইন্ডিং
যে পদ্ধতিতে পড়েন সুতা মাকুতে প্রবেশের উদ্দেশ্যে খালি নলি/পার্ন এ জড়ানো হয় তাকে পার্ন ওয়াইন্ডিং বলে। সাধারণত পড়েন সুতা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পার্ন মাকুতে প্রবেশ করানো হয়।
(গ) চিজ ওয়াইন্ডিং
যে পদ্ধতিতে সুতার ছোট প্যাকেজ থেকে পরবর্তী সুবিধাজনক কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সুতার বড় প্যাকেজ অর্থাৎ চিজ আকারে সুতা জড়ানো হয় তাকে চিজ ওয়াইন্ডিং বলে। সুতা বহন করার সুবিধার্থে চিজ তৈরি করা হয়।
(ঘ) স্থুল ওয়াইন্ডিং
যে পদ্ধতিতে সুতার ছোট প্যাকেজ থেকে পরবর্তী সুবিধাজনক কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সুতার বড় প্যাকেজ অর্থাৎ স্পুল তৈরি করা হয় তাকে স্পুন ওয়াইন্ডিং বলে। স্পুল সাধারণত জুট ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি করা হয়। বিম তৈরির উদ্দেশ্যে টানা সুতা হিসেবে স্কুল ব্যবহৃত হয়।
বিভিন্ন প্রকার ওয়াইন্ডিং প্যাকেজের নাম
o কোন
০ চিজ
o স্কুল
০ পান
০ কপ ইত্যাদি।
উপসংহার /মন্তব্য
সংজ্ঞা
যে পদ্ধতিতে অনেকগুলো ছোট ছোট সুতার প্যাকেজ যেমন- কোন, স্কুল, চিজ প্রভৃতি হতে টানা সুতাগুলোকে নির্দিষ্ট বহরে ও নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যে সমান্তরালভাবে সাজিয়ে ধারাবাহিক স্তরের আকারে একটি খালি বিমে জড়ানো হয় তাকে টানা প্রকরণ বলে। যে বিমে সুতাগুলোকে জড়ানো হয় তাকে ওয়ার্পার বিম বলে ।
টানা প্রকরণের প্রকারভেদ
টানা প্রকরণ প্রধানত ২ প্রকার। যথা:
(ক) সেকশনাল বা বিম ওয়ার্সিং
(খ) ড্রাম ওয়ার্সিং
এটি ছাড়া আরও এক প্রকার ওয়ার্নিং রয়েছে যা বল ওয়ার্সিং নামে পরিচিত। টানা প্রকরণ বা ওয়ার্সিংকে নিম্নলিখিতভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়।
উপসংহার /মন্তব্য
সংজ্ঞা
সাধারণত বস্তু সংখ্যক টানা সুতা বিশিষ্ট চেক ফেব্রিক্স এর ক্ষেত্রে যেখানে রঙিন সুতার সংখ্যা মোট সুতার ১৫% এর বেশি সে সব ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে ওয়ার্সিং-এর পূর্বে হ্যাংক অবস্থায় সাইজিং করে নিতে হয়। পরে সাইজিং সুতাকে ববিনে জড়ানো হয়। অতঃপর ববিনগুলোকে ক্রিলে সাজানো হয়। সেকশনাল ওয়ার্সিং এর ক্ষেত্রে আজকাল যথেষ্ট উন্নতি লক্ষ করা যায় যেমন ওয়ার্সিং -এর বিমিং -এর গতি উচ্চ হতে উচ্চতর হয়ে থাকে। বিমের ফ্লাঞ্জ বৃহৎ রাখা হয় এবং ড্রামে সবগুলো সেকশনের গঠন প্রকৃতি সিলিন্ড্রিক্যাল রাখা হয়।
ক্রিল সাজানো
প্রথমে সুতা ফ্লাঞ্জ ববিনে জড়ানো হয়। এরপর রঙিন সুতার সংখ্যা অনুযায়ী ক্রিলে ববিনসমূহ সাজানো হয়।
মনে করা যাক, সাদা সুতার সংখ্যা = ২৪টি
লাল সুতার সংখ্যা = : ২৪টি
ক্রিলে সাধারণত ৫ খোপ থাকে
যে নিয়মে রঙিন সুতা টানা বিমে রাখতে হবে সে নিয়মে টানা সুতার ফ্রাঞ্জ ববিন ততটি করতে হবে। অর্থাৎ ক্রিলে প্রথমে ২৪টি সাদা সুতার ববিন ও পরে ২৪টি লাল সুতার ববিন এভাবে নিতে হবে। প্রথমে ক্রিলের বাম দিক থেকে উপরের ছিদ্রপথে প্রথম ও দ্বিতীয় খোপে সাদা সুতার ববিন এবং তৃতীয় ও চতুর্থ খোপে লাল সুতার ববিন এই নিয়মে প্রথম কাঠি বা শলা পরিয়ে ববিনগুলো স্থাপন করতে হবে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি ক্রিলের খোপে ববিন সাজানো হয়।
উপসংহার /মন্তব্য
ভূমিকা
সাইজিং -এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো টানা সুতার ন্যূনতম ক্ষতি না করে কাপড় উইভিং করা। সাইজিং -এ এই উদ্দেশ্য সাধিত হয় সুতার মধ্যকার আঁশসমূহ পারস্পরিক লেগে থেকে এর শক্তি ও ক্ষমতা ও মসৃণতা বৃদ্ধির মাধ্যমে। উইভিং বিভাগে সুতায় সাইজিং করা ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়। তবু সুতায় সাইজিং করা হয়। কেন না সাইজিং করার কারণে উইভিং -এর দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
মাড়ের উপাদান ও উদাহরণ
শ্বেতসারযুক্ত উপাদান (Adhesive substance)
উদাহরণ- মেইজ স্টার্চ (Maise starch), তেঁতুলের বিচির পাউডার (Tamarind seed powder), টপিওকা স্টার্চ (Topioca starch), ময়দা (Flour), সাও স্টার্চ (Sagoo starch), আলুর প্যালো (Potato starch), রাইচ স্টার্চ (Rice starch) ইত্যাদি প্রাকৃতিক স্টার্চ। আবার সিএমসি (Carboxy Methyl Cellulose), পিভিএ (Polyvenyle Alcohol), পলিঅ্যাক্রাইলিক অ্যাসিড ইত্যাদি কৃত্রিম স্টার্চ বা অ্যাডহেসিভ।
সফেনিং এজেন্টস (Softening Agents)
উদাহরণ- মাটন ট্যালো ( Mutton tallow), টেলটেক্স (Teltex), নারিকেল তেল (Coconut oil), ক্যাস্টর ওয়েল, তিলের তেল, তালের তেল, তুলার বীজের তেল, জলপাই এর তেল, রেড়ির তেল, প্যারাফিন ওয়াক্স (Parafin wax), চায়না মোম (China wax), সুগার ক্যান ওয়াক্স (Sugarcane wax), ওয়াক্স (Wax), সফট সোপ (Soft soap) ইত্যাদি।
হাইগ্রোসকোপিক এজেন্টস (Hygroscopic Agents )
উদাহরণ- ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2), ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl2 ), গ্লিসারিন, জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), ডাই ইথিলিন গ্লাইকল, সরবিটল ইত্যাদি।
অ্যান্টিসেপটিক এজেন্টস (Anticeptics )
উদাহরণ- জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl2), কপার সালফেট (CuSO4), সেলিসাইটিক অ্যাসিড (CH4 (OH) COOH), সোডিয়াম সিলকো ক্লোরাইড, বিটা নেপথলস, কার্বোলিক অ্যাসিড ইত্যাদি ।
নিউট্রালাইজিং এজেন্টস (Neutralizing Agents )
উদাহরণ- সোডা অ্যাশ।
অ্যান্টিফোমিং এজেন্টস (Antifoaming Agents )
উদাহরণ- অ্যাসিটিক অ্যাসিড (CH3COOH), কেরোসিন, টার্পেন্টাইন, পাইন অয়েল, অ্যামাইল, অ্যালকোহল, সিলিকন ডিফোমার ইত্যাদি।
টিনটিং বা রঞ্জক উপাদান (Tinting of Colouring Agents )
উদাহরণ- টিনাপল (Tinapol) আলট্রা মেরিন ব্লু, অ্যাসিড ডাই ও অপটিক্যাল ব্রাইটেনিং এজেন্ট ইত্যাদি।
ওয়েটিং এজেন্টস (Weighting Agent)
উদাহরণ- চায়না ক্লে (China clay), চক বা খড়িমাটি (CaCO3), ফ্রেঞ্চ চক (French Chalk), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ( MgSO4), সোডিয়াম সালফেট (Na2SO4), ম্যানেশিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) ইত্যাদি।
মাড়ের উপাদান নির্ধারণ করার বিবেচ্য বিষয়সমূহ
০ টানা সুতার ধরন
০ মাড়ের উপাদান/উপকরণের মূল্য
০ মাড়ের ভিসকোসিটির স্থায়িত্ব
০ আঠালো জাতীয় পদার্থ
০ ডিসাইজিং-এর সময় সহজেই অপসারণের যোগ্যতা
০ মেশিনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সতর্কতা
০ উপকরণ যাতে স্বাস্থ্যসম্মত হয়।
০ কাপড়ের কোনো ক্ষতি না হয়।
০ পানিতে সহজেই দ্রবণীয় হতে হবে।
০ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সুতায় থাকতে হবে।
০ অপসারণের পর্যায়ে খরচ যাতে কম হয়।
উপসংহার /মন্তব্য
সংজ্ঞা সাইজ :
টানা সুতার শক্তি বৃদ্ধি ও ঘর্ষণজনিত কারণে সুতা ছেঁড়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিমিং করা টানা সুতার পৃষ্ঠব্যাপী আঠালো পদার্থ ও অন্যান্য উপাদান দ্বারা মসৃণ করা হয়। এই আঠালো পদার্থসমূহকে একত্রে সাইজ বলা হয় এবং প্রণালীকে মাড় প্রকরণ বা সাইজিং (Sizing) বলে।
সাইজিং :
টানা সুতার শক্তি বৃদ্ধি ও ঘর্ষণজনিত কারণে সুতা ছেঁড়ার হাত থেকে টানা সুতাকে রক্ষা করার জন্য টানা সুতার শিটের পৃষ্ঠে আঠালো পদার্থ ও অন্যান্য সাইজিং উপাদান-এর সাহায্যে টানা সুতাকে মসৃণ করার প্রণালিকে সাইজিং (Sizing) বলে।
সতর্কতা
০ রেসিপি কমবেশি হলে মাড়ের দ্রবণ ঘন ও পাতলা হতে পারে যা মাড় প্রকরণ সুতার জন্য ক্ষতিকর।
০ মাড়ের উপাদান নির্বাচন করার সময় উপাদানের প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে নতুন মাড় প্রকরণের খরচ বেড়ে যাবে।
উপসংহার /মন্তব্য
আরও দেখুন...